About Us

প্রতিষ্ঠাতা : মরহুম মুজিবুর রহমান ভান্ডারী

আজ থেকে প্রায় আড়াই হাজার বছর আগের গৌরবময় পুন্ড্র সভ্যতার প্রাণকেন্দ্র ছিল পুন্ড্র নগর (মহস্থান) এই অগ্রবর্তী প্রাচীন জনপদই কালক্রমে পরিণত হয়েছে বগুড়া জেলা শহরে। ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় করতোয়া নদীর অববাহিকায় এ শহরে বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান উজ্জ্বল নক্ষত্রের মত স্বমহিমায় উদ্ভাসিত। সরকারি মুজিবুর রহান মহিলা কলেজ তার মধ্যে অন্যতম। ১৯৬৩ সালেরর ৩১ জুলাই সুবিল খালের পাড়ে এই কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রায় ১৫ বছর বেসরকারি অবস্থায় থাকার পর ১ ফেব্রুয়ারী ১৯৭৮ এ প্রতিষ্ঠানটি জাতীয়করণ করা হয়। বগুড়ার তৎকালীন খ্যাতনামা শিল্পপতি ও শিক্ষা অনুরাগী মুরহুম মুজিবুর রহমান ভান্ডরী ছিলেন এই কলেজের প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে অন্যতম প্রধান ব্যক্তি। তার নাম অনুসারেই এই কলেজটির নামকরণ হয়।

উত্তরাঞ্চলের এই ঐতিহ্যবাহী নারী শিক্ষার প্রতিষ্ঠানটি বহু আগেই অভিভাবক ও সুধী সমাজের প্রসংশা ও দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সর্মথ হয়েছে। এখানে শিক্ষার সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশ, দক্ষ ও মেধাবী অধ্যাপকমন্ডলী ও আধুনিক সুদক্ষ কলেজ প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে ছাত্রীরা প্রকৃত শিক্ষা ও সৃজনশীলতা বিকাশের সুযোগ পাচ্ছে। সর্বোপরি সন্ত্রাসমুক্ত নিরাপদ পরিবেশে ছাত্রীরা নির্বিঘে যথাসময়ে প্রত্যকটি পরিক্ষায় আশানুরুপ ভাল ফল লাভ করেছে। সার্বিক কৃতিত্বের স্বাক্ষর স্বরুপ সরকারি মুজিবুর রহমান মহিলা কলেজ ১৯৯৬ সালে বগুড়া জেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ২০০০ সালে বগুড়া সদর থানা ও জেলা পর্যায়ে (জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহে) শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং ২০১৬ সালের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের র‌্যাংকিং-এ রাজশাহী বিভাগে নবম স্থানের মর্যদা লাভ করে।

এই কলেজে উচ্চ মাধ্যামিক পর্যায়ে মানবিক, ব্যবসা শিক্ষা ও বিজ্ঞান বিভাগ, স্নাতক বা ডিগ্রী পর্যায়ে বিএ, বিএসএস ও বিএসসি (পাস) এবং বাংলা ইংরেজী, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ইতিহাস, দর্শন, অর্থনীতি, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি এবং প্রাণীবিদ্যা বিষয়ে অনার্স এবং ৭টি বিষয়ে মাস্টার্স কোর্স চালু রয়েছে। অতিসত্বর আরো কিছু বিষয়ে অনার্স খোলার প্রক্রিয়া চলছে।

ফলাফল : ইতোমধ্যে অনার্স এবং মাস্টার্স এর প্রকাশিত ফলাফলে সাফল্যের হার ঈর্ষনীয়। প্রতিটি বিভাগেই একাধিক ছাত্রী ১ম শ্রেণী অর্জন করেছে। তাদের এই ফলাফলের জন্য কলেজ প্রশাসন তাদেরকে সংবর্ধনা দিয়েছে লেখাপড়ার সুবিধর্থে কলেজে রয়েছে প্রযোজনীয় সংখ্যক বইসহ বিশাল কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি, অনার্স বিভাগসমূহের সেমিনার লাইব্রেরি, বিষয়ভিত্তিক অত্যাধুনিক বিজ্ঞান গবেষণাগার, কম্পিউটার ল্যাব ও সেমিনার কক্ষ। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে ছাত্রীদের লেখাপড়ার জন্য কলেজ প্রশাসনের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ইতিমধ্যে ব্যবসায় শিক্ষা শাখাসহ সমাজ বিজ্ঞানে নতুন শিক্ষকের পদ সৃষ্ঠি হয়েছে। ছাত্রীদের লেখাপড়ার পাশাপাশি এ কলেজে শারীরিক ও মানসিক বিকাশের লক্ষ্যে খেলাধুলা ও সংস্কৃতি চর্চার উপযুক্ত ব্যবস্থা ও পরিবেশ আছে। ছাত্রীদের দেশ ও সমাসেবামুলক কাজে উৎসাহ ও অংশগ্রহণের জন্য এ কলেজে বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর, রোভার স্কাউট ও রেঞ্চার্সের ইউনিট রয়েছে শহর ও শহরের পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের ছাত্রীদের নিয়মিত কলেজে যাতায়াতের জন্য রয়েছে নিজস্ব পরিবহণের (বাস) ব্যবস্থা। প্রতিটি ভবনে বর্ণিল রঙ্গে পেইন্টিং এর মাধ্যমে এক নান্দনিক শোভা প্রদান করা হয়েছে।

দূরবর্তী ছাত্রীদের জন্য কলেজ ক্যম্পাসের ভেতরে ময়জাননেছা ভান্ডারী হল ও বেগম জাহানারা রহমান হল নামে দুইটি অত্যাধুনিক হোস্টেল আছে। বর্তমানে বেগম রোকেয়া নামে অরো একটি নতুন ছাত্রীনিবাসের সংযোজন হয়েছে। ভবনগুলোতে প্রায় পাচঁ শতাধিক ছাত্রীর আবাসের ব্যবস্থা রয়েছে। ক্যাম্পাসের মধ্যে মসজিদ, কলেজক্যান্টিন ও ডিপার্টমেন্টাল স্টোরসহ কলেজ গেট সংলগ্ন ডাকঘর ও পার্শ্ববর্তী বাজার সকলের প্রয়োজন মেটায়। ছাত্রীদের সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের জন্য রয়েছে মুক্ত মঞ্চ ”বৈশাখী ”। এছাড়া ছাত্রী ও শিক্ষকদের সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের জন্য রয়েছে সাংস্কৃতিক সংগঠন আনন্দ নৃত্য।

উচ্চ মাধ্যমিক পরিক্ষা ছাড়া ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিনে ডিগ্রী পাস, অনার্স, মাস্টার্স, বি-এড, বি,পি-এড এবং গ্রন্থাগার ও তথ্য বিজ্ঞান ডিপ্লোমা প্রভৃতি পরিক্ষা অনুষ্ঠিত হ। সকল পরিক্ষার সুষ্ঠ ও সুন্দর পরিবেশের জন্য এই কলেজের সুনাম রয়েছে। বর্তমানে সরকার ও কলেজ প্রশাসনের উদ্যেগে এই প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন সংস্কার ও উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড অব্যাহত রয়েছে।

error: Content is protected !!